থাইল্যণ্ডের যে 8টি জায়গায় ভারতীয়রা যায় না, কিন্তু যাওয়া উচিত্!

Smita Jha

Last updated: Sep 24, 2019

Author Recommends

Do

Koh Lanta: Explore Tham Khao Maikaeo, a network of forest caverns and hill tunnels, with narrow passages leading to cathedral sized chambers, full of stalactites and stalagmites

See

Sukhothai: See over a 100 historical sites, including UNESCO protected Historical Park and Si Satchanalai Historical Park, in this first capital of Thailand

Trivia

Khao Lak: Rafflesia, the largest single flower in the world can be found in Khao Sok National Park, only a few kilometers from Khao Lak. See but don't pluck!

Filmy

Kanchanaburi: “The Bridge over the River Kwai”, the 1957 film by David Lean, was shot here

Click

Kanchanaburi: Take that memorable photo against the seven tier waterfall at the Erawan National Park

Want To Go ? 
   

আমরা ভারতীয়রা পর্যটক হিসাবে খুব বিখ্যাত নই। সুরক্ষিত থাকা, আরামদায়ক হোটেল বুক করা, নানান খাবার-দাবার নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করি না, এবং কিছু চিরাচরিত রুটিনেরই চর্বিত চর্বণ করে থাকি। কিন্তু আমার মনে হয় কখনও কখনও আমাদের এই সুখী গৃহকোণটি ছেড়ে বেরিয়ে অল্পজ্ঞাত বা অজ্ঞাত জায়গাগুলিতে বেড়িয়ে আসা উচিত্‍। আমরা বাঁচার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু সে একবারই। থাইল্যাণ্ড অবাক করে দেওয়ার মত জায়গা এবং প্রতি পদক্ষেপে নতূনত্ব লুকিয়ে আছে, এবং এটি এমন একটি দেশ যেখানে একাসাথে ভোগবিলাস এবং অ্যাডভেঞ্চার – দুরকম জিনিসই পাবেন। থাইল্যাণ্ডের প্রকৃত সৌন্দর্য এখানকার স্বল্পজ্ঞাত জায়গাগুলিতেই দেখতে পাওয়া যায়। অমরা আপনার জন্য নিয়ে এসেছি থাইল্যণ্ডের এমন 8টি জায়গা যেখানে ভারতীয়রা যায় না, কিন্তু যাওয়া উচিত্‍!

খাও ল্যাক

thai-destinations-indians-don’t-visit-khao-lak.

শহুরে ভিড় আর বাণিজ্যিক বীচগুলো থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, কিন্তু তাও সভ্যতার ছোঁয়ার বাইরে যেতে চাইছেন না? ফুকেতে খাও ল্যাক ঘুরে আসুন একবার। এখানকার বীচগুলি সুদূরবিস্তৃত, সুন্দর এবং পেছনে গাছগাছালিতে ভরা পাহাড়ের রয়েছে – সব মিলিয়ে বেশ আদুরে পরিবেশ। পাথুরে জায়গা, দ্বীপ, এবং ঝাঙ্ঘালের ভেতর জলপ্রপাতগুলি অসাধারণ। বিশ্বের বৃহত্তম একক ফুল রাফ্লেসিয়া দেখতে পাবেন খাও ল্যাক থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে খাও সক ন্যাশনাল পার্কে। এই ন্যাশনাল পার্কটিতে বেশ কম খরচেই আপনি এই রেইন ফরেস্টের ভেতর গেস্টহাউসে রাত কাটাতে পারবেন। খাও ল্যাক থেকে খাও সক পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাটিও ভীষণ সুন্দর।

কোহ লান্তা

thai-destinations-indians-don’t-visit-koh-lanta.

ক্রাবি অঞ্চলের বৃহত্তম দ্বীপ হল কোহ লান্তা। এই দ্বীপটি অপেক্ষাকৃত সমতল এবং এখানে মোটবাইকে যাতায়াত করা যায় প্রায় সর্বত্রই। আপনি এই দ্বীপে ঘণ উপকূলীয় বৃক্ষের জঙ্গল , প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃ্তি, আতিথেয়তাপরায়ণ স্থানীয় মানুষজন এবং প্রচুর ভাল ভাল খাবার জায়গা পাবেন। এখানকার বীচগুলি অসাধারণ এবং থাইল্যাণ্ডের অন্য যেকোন বীচের থেকে সুন্দর – সুদূরবিস্তৃত সাদা বালিতে রোদের মাখামাখি এবং আদুরে নরম ঢেউ। আপনার মাথায় যদি অ্যাডভেঞ্চারের ভুত থাকে তাহলে থাম খাও মাইকেও ঘুরে অসুন – এটি জংলী গুহা এবং পাহাড়ী সুড়ঙ্গের একটি নেটওয়ার্কের মত, যেটি আপনাকে নিয়ে যাবে ক্যাথেড্রালের মত প্রমাণ আকারের চেম্বারে যেখানে ওপর থেকে ঝুলে থাকবে স্ট্যালেকটাইট আর পায়ের নীচে স্ট্যালেগমাইট। কোহ লান্তা এর অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য বিখ্যাত এবং এখানে রয়েছে পৃথিবীর আশ্চর্যকর সব কোরালের ডুবো পাহাড়।

সুরাট থানি

thai-destinations-indians-don’t-visit-koh-lanta.

সুরাট থানির আক্ষরিক অর্থ হলভাল মানুষদের শহর”; এই শহরটি ইন্দোনেশীয় শ্রীবিজয় সাম্রাজ্যের অধীন ছিল এবং রাজা বজিরাবুধ এই নামকরণ করেছিলেন। দক্ষিণ থাইল্যাণ্ডের উপকূলে কেন্দ্রীয় উপসাগরে অবস্থিত এই শহরটিতে রয়েছে চমত্কার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসের মেলবন্ধন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ, বর্তমানে এটি এর চেয়েও বেশি আকর্ষণীয় গাল্ফ কোস্ট আইল্যাণ্ডগুলির প্রবেশদ্বার হয়েই থেকে গেছে। গাছগাছালিতে ভরা পাহাড় এবং পশ্চিমের উঁচু মালভূমি নীচের অববাহিকায় নেমে আসে। শান্ত গভীর নদীর জল এসে মিশছে সমুদ্রের নীল জলে মিশে এক অদ্ভূত সৌন্দর্য তৈরি করে, বিশেষ করে তাপী নদীর অববাহিকায়। সুরাট থানিতে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেণ্ট রয়েছে যেখনে আপনি সী ফুড পেয়ে যাবেন, এবং তা থাইল্যাণ্ডের সেরা সী ফুডের থেকে কম যায় না, এবং তাও অনেক কম খরচে। মূল্যবান কিছু উপহারসামগ্রী, কাপড়ের জিনিস বা ঐতিহাসিক কিছু জিনিস কিনে নেওয়ার জন্য নিকটবর্তী গ্রামের হস্তশিল্প বা ফোকলোর মিউজিয়ামে ঢুকে পড়তে পারেন।

thailand-holiday-packages

কাঞ্চনবুরি

thai-destinations-indians-don’t-visit-kanchanaburi

কাঞ্চনবুরির বিখ্যাত হওয়ার কারণ হল 1957-র ডেভিড লীনের সিনেমা “ব্রিজ ওভার দ্য রিভার ক্বাই”। অধুনা “ডেথ রেলওয়ে” নামে পরিচিত এই রেলওয়েটি বহু যুদ্ধবন্দীর প্রাণের বিনিময়ে তৈরি হয়েছিল। গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্পটি শুনেই আপনার একবার যাবার ইচ্ছে হবে এখানে। যাই হোক, ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই, থাই প্রভিন্সটিতে শুধু মাত্র এই ভুতুড়ে জায়গাই নেই। কাঞ্চনবুরি হল গভীর জঙ্গলে, বহু প্রাচীন জলপ্রপাত এবং পাহাড়ী গুহায় ভরা একটি বিশাল ভূখণ্ড, একজন সত্যিকারের এক্সপ্লোরারের স্বপ্নের জায়গা। থাইল্যাণ্ডের চিরাচরিত বীচ লাইফের থেকে অনেক দূরে অবস্থিত কাঞ্চনবুরিতে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য রয়েছে অজস্র আকর্ষণ। থাং ইয়াই নারেসুয়ান ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি ঘুরে আসুন, এখানে বিশ্বের কিছু ভার্জিন ফরেস্ট ক্যানপি এখানে এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। এখান থেকে এরাওয়ান ন্যাশনাল পার্কের সাত-ধাপ বেয়ে  নামা দুগ্ধ-সফেন জলপ্রপাতের ছবি তুলুন, হেলফায়ার পাস মিউজিয়ামে ইতিহাসকে আবার নতুন করে দেখুন এবং খরস্রোতা জলে রাফটিং করে এগিয়ে যান লাওয়া কেভের দিকে। প্রাত্যহিক কাজে কাজে মৃতপ্রায় মস্তিস্কের সতেজতার জন্য একটি আদর্শ গেটওয়ে। এবং এখানে থাকাকালীন বড় বড় বাঘেদের সঙ্গে নিজের ছবি তুলতে ভুলবেন না।

নাখোন রতচসিমা

thai-destinations-indians-don’t-visit-nakhon-ratchasima

নাখোন রতচসিমা কৃষি পর্যটনের জন্য বিখ্যাত। এই জায়গাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও সমৃদ্ধ এবং এখানকার খমের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের জন্য বিখ্যাত। প্রখাও ইয়াই ন্যাশনাল পার্কে কৃতিপ্রেমীরা এখানে 112 প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী 320 প্রজাতির পাখি দেখতে পাবেন, সঙ্গে ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিং এর সুযোগও। ফিমাই হিস্টরিক্যাল পার্ক হল প্রাচীন খমেরদের ঐতিহাসিক জায়গা। এখানে আয়তাকার আকৃতিটি জটিলভাবে খোদাই করা এবং এর স্থাপত্যের সঙ্গে অ্যাঙ্করওয়াটের স্থাপত্যের অনেক মিল রয়েছে। নাখোন রতচিসমাতে সুন্দর সুন্দর হস্তশিল্প যেমন দন কিউইয়ান পটারি এবং ম্যাট মি সিল্ক ইত্যাদি উত্‍পন্ন হয়। জিম থমসন ফার্ম ট্যুরে আপনি রেশমগুটি পালন, মাশরুম চাষ, এবং মাঠ ভর্তি রঙিন ফুল দেখতে পাবেন।

সুখোতাই

thai-destinations-indians-don’t-visit-sukothai

সুখোথাইয়ের এক প্রাচীন ইতিহাস আছে, যার শুরু বহু অতীতে। এটি থাইল্যাণ্ডের প্রথম রাজধানী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল 1238 খ্রীষ্টাব্দে এবং এখানে এখনও শতাধিক ঐতিহাসিক জায়গা রয়েছে। এখানেই বিখ্যাত লোই ক্র্যাথং উত্‍সব পালিত হয়। এই সময় প্রচুর ছোট ছোট মোমবাতি এবং ফুল নদী এবং জলপথগুলিতে ভাসানো হয়, আর সেখানে এক অদ্ভূত সুন্দর দিব্য দৃশ্যের সৃষ্টি করে। সুখোথাই হিস্টরিক্যাল পার্ক এবং সি সতচনলাই হিস্টোরিক্যাল পার্ক হল UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট; এখানে সবুজ পাহাড়ের কোলে শুয়ে রয়েছে বড় বড় স্মৃতিসৌধের ঐতিহাসিক সব ধ্বংসাবশেষ, আর রয়েছে সুপ্রবাহী নদী এবং পদ্মপুকুর। সুখোথাই এখানকার হাতে তৈরি সোনার গয়নার, কব্জিবন্ধনী, বালা, আংটি এবং অন্যান্য উপহারসামগ্রীর জন্যও বিখ্যাত।

চিরাগ রাই

thai-destinations-indians-don’t-visit-chiang-rai

থাইল্যাণ্ডের একটি খুব সুন্দর মন্দির হল চিরাগ রাই; এটি অপেক্ষাকৃত স্বল্পজ্ঞাত চিরাগ মাই থেকে 5 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বিচিত্র ওয়াইল্ডলাফের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন সভ্যতা এবং বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। একসময় বার্মা, লাওস এবং থাইল্যাণ্ড যেখানে মিলিত হয় সেই গোল্ডেন ট্রায়ঙ্গল আফিমের ব্যবসার জন্য একসময় বিখ্যাত ছিল। এই জায়গাটি চিয়াং মাইয়ের মত ভিড়ে ভরা ব্যস্ত শহুরে জীবন থেকে দূরে হাত পা ছড়িয়ে আরাম করার জন্য আদর্শ জায়গা। পাহাড়ে চড়তে থাকুন, দেখবেন পাহাড়ী উপজাতির লোকজনদের মাঝে এসে পড়েছেন। থাই জীবনযাত্রায় আধুনিক সভ্যতা ঢুকে পড়লেও এঁরা এখনও নিজেদের প্রাচীন পারম্পরিক পদ্ধতিতেই জীবন যাপন করছেন।

আয়ুত্থায়া

thai-destinations-indians-don’t-visit-ayutthaya

ব্যাঙ্কক-চিয়াং মাই রেল রুটের ওপরই অবস্থিত আয়ুত্থায়া হল একটি শহরের ধ্বংশাবশেষ যা সিয়ামিজ ইতিহাসের সাক্ষী। প্রাচীন সময়ের আদলেই তৈরী কয়েকটি সুন্দর মন্দির রয়েছে এখানে। বিকাশের গোড়ার দিকে এটি কলা এবং বাণিজ্যের একটি বিশ্বজনীন কেন্দ্র হয়ে উঠছিল। এই শহরটি বার্মার আক্রমণে পড়ে 1767 খ্রীষ্টাব্দে, শহরটিকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে জায়গাটি। বর্তমানে এই শহরটি থাই কলা, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং দৈব প্রকৃতির মিলিত রূপ। চাও ফ্রায়া নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরটিতে প্রচুর মন্দির এবং আশ্চর্য সব স্থাপত্য রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি হল, আয়ুত্থায়া শহর, ব্যাং পা-ইন সামার প্যালেস এবং ওয়াট চাই ওয়াট্টানরম। চাও ফ্রায়া নদী এই জেলার বাণিজ্যপথ হিসাবে ব্যবহৃত হয়, এবং ঐ নদী বরাবর নৌকা বিহারেই এই শহরটিকে সবচেয়ে ভালভাবে দেখা যায়।

এই সব অফবিট জায়গাগুলিতেই কিন্তু ব্যাঙ্কক থেকে যাওয়া যায়। এই জায়গাগুলি অপেক্ষাকৃতভবে মূল জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্যই থাইল্যণ্ডের তথাকথিত উন্মাদ করা ভিড় জমজমাট জনবহুল জনপ্রিয় জায়গাগুলি থেকে বিমুখ পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। আপনি একাই ব্যাগপ্যাক করে বেরিয়ে পড়ুন বা সপরিবারে ছুটি কাটাতে যান, আমাদের এই আটটি জায়গাতে গিয়ে এবার একটু অন্যরকম কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে আসুন। ছুটি ভাল কাটুক! 

Book Your Flight to Thailand Here!